প্রধান বৈশিষ্ট্য :
- যাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে তাদের স্বচ্ছভাবে পুরো অর্থ পেতে ই-রুপী ভাউচার সাহায্য করবে : প্রধানমন্ত্রী
- ডিবিটিকে আরো কার্যকর করে তুলতে ই-রুপী ভাউচার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং ডিজিটাল গর্ভন্যান্সকে নতুন মাত্রা দেবে : প্রধানমন্ত্রী
- আমরা দরিদ্রদের সাহায্য করার জন্য তাদের বিকাশের মাধ্যম হিসেবে প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছি : প্রধানমন্ত্রী
- উদ্ভাবন, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলি সহ বিশ্বকে ভারতের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
- বিগত ৬ – ৭ বছরে দেশের ডিজিটাল পরিকাঠামো এবং ডিজিটাল লেনদেনের প্রভাবকে সারা বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে : প্রধানমন্ত্রী
নয়াদিল্লি : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থাপনা ই-রুপী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সূচনা করেছেন। এই ব্য়বস্থায় নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য এবং যে উদ্দেশ্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, সেই অর্থ ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে পৌঁছাবে। ই-রুপী হল নগদ বিহীন এবং সংস্পর্শহীন একটি ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থা।
প্রধানমন্ত্রী এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বলেন, ডিবিটি বা প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরকে আরো কার্যকর করে তুলতে ই-রুপী ভাউচার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এর মাধ্যমে ডিজিটাল গর্ভন্যান্স এক নতুন মাত্রা পাবে। যাদের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হবে, তাদের স্বচ্ছভাবে পুরো টাকা পেতে এই ব্যবস্থা সাহায্য করবে। তিনি বলেন, প্রযুক্তি মানুষের জীবনে যুক্ত হয়ে ভারতের প্রগতিকে নিশ্চিত করেছে, ই-রুপীর মাধ্যমে এখন সেটি অনুভূত হবে। স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে সারা দেশ যখন অমৃত মহোৎসব পালন করছে, সেই সময় ভবিষ্যতের চাহিদা মেটানোর মতো এধরণের একটি সংস্কার কার্যকর হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, সরকারের পাশাপাশি কোনো সংগঠন যদি কোনো ব্যক্তি বিশেষের চিকিৎসা, শিক্ষা অথবা অন্য কোনো কাজে সাহায্য করতে চায়, কিংবা কোনো প্রকল্পে যুক্ত হতে চায়, তাহলে তারা নগদ অর্থের পরিবর্তে ই-রুপী ভাউচার ব্যবহার করতে পারবে। এর ফলে কোনো কাজের জন্য তিনি যে অর্থ দেবেন, সেটি নিশ্চিতভাবে সংশ্লিষ্ট কাজে ব্যবহৃত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ই-রুপী কোনো ব্যক্তি বিশেষের জন্য অথবা কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যাবে। এই ব্যবস্থায় কোনো ব্যক্তিকে অথবা কোনো প্রকল্পকে সাহায্য করার জন্য যে অর্থ বরাদ্দ হবে, সেই টাকা পুরো ব্যবহার করার বিষয়টি নিশ্চিত হবে।
শ্রী মোদী এই প্রসঙ্গে সেই সময়ের কথা স্মরণ করেন, যখন প্রযুক্তি শুধুমাত্র ধনী ব্যক্তিদের করায়ত্ত ছিল। ভারতের মতো দরিদ্র দেশের ক্ষেত্রে সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করার কোনো উপায় ছিল না। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার যখন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করার উপর গুরুত্ব দিয়েছিল, সেই সময় কিছু রাজনৈতিক নেতা নেত্রী এবং বিশেষজ্ঞ এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আজ দেশ সেই সব মানুষদের ভাবনা চিন্তাকে অগ্রাহ্য করেছে এবং তাদের ভাবনা যে ভুল সেটি প্রমাণিত হয়েছে। দেশ এখন অন্যভাবে চিন্তাভাবনা করে, নতুন চিন্তাভাবনা করে। আজ আমরা বুঝতে পারছি, দরিদ্র মানুষকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সাহায্য করা সম্ভব হচ্ছে, তাদের উন্নয়নে প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
কিভাবে প্রযুক্তি স্বচ্ছ ও সঠিকভাবে আর্থিক লেনদেনে সাহায্য করে এবং দরিদ্র মানুষের জন্য নতুন নতুন সুযোগ করে দেয়, সে বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন। মানুষের কাছে আজ এই পণ্য পৌঁছে দেওয়ার আগে জেএএম ব্যবস্থার মাধ্যমে বছর কয়েক ধরে তার ভীত গড়ে তোলা হয়েছে। জেএএম, মোবাইলের সঙ্গে আধারের সংযোগ স্থাপন করেছে। জেএএম এর সুফল মানুষ বেশ পরে বুঝতে পেরেছে। লকডাউনের সময়কালে আমরা দেখেছি, কিভাবে দরিদ্র মানুষকে এই ব্যবস্থায় সাহায্য করা সম্ভব হয়েছে। সেই একই সময়ে অনেক দেশ তাদের জনসাধারণকে সাহায্য করতে চাইলেও নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তরের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে সাড়ে ১৭ লক্ষ কোটি টাকার বেশি অর্থ সরাসরি পাঠানো হয়েছে। ৩০০র বেশি প্রকল্প প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর প্রক্রিয়ায়কে ব্যবহার করছে। রান্নার গ্যাস, রেশন, চিকিৎসার জন্য অর্থ বৃত্তি, পেনশন অথবা বেতন দেওয়ার জন্য ডিজিট্যাল মাধ্যম ব্যবহার করায় ৯০ কোটি ভারতীয় এই ব্যবস্থায় উপকৃত হয়েছেন। পিএম কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্পে কৃষকদের কাছে ১ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা সরাসরি পাঠানো হয়েছে। সরকার যখন গম কিনেছে, তার জন্য ৮৫ হাজার কোটি টাকা এই পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে সরাসরি পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এই ব্যবস্থায় সব থেকে যেটি সুবিধা হয়েছে, তা হল ১ লক্ষ ৭৮ হাজার কোটি টাকা ভুল লোকের হাতে পড়ে নি।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে আর্থিক লেনদেনের উন্নতি হয়েছে, এর ফলে দরিদ্র, বঞ্চিত, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, কৃষক এবং জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষেরা উপকৃত হয়েছেন। জুলাই মাসে ইউপিআই –এর মাধ্যমে ৩০০ কোটি লেনদেন হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে ৬ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক লেনদেন সম্ভব হয়েছে, যা একটি রেকর্ড।
শ্রী মোদী বলেন, ভারত প্রমাণ করেছে প্রযুক্তি গ্রহণ করে তা কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে আমরা অদ্বিতীয়। উদ্ভাবন, প্রযুক্তির ব্যবহার এবং পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলি সহ বিশ্বকে ভারতের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে
প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশের ছোট এবং বড় শহরগুলিতে ২৩ লক্ষ রাস্তার হকার পিএম স্বনিধি যোজনার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। মহামারীর এই সময়ে প্রায় ২৩০০ কোটি টাকা তারা পেয়েছেন।
শ্রী মোদী বলেন, বিগত ৬ – ৭ বছরে ডিজিটাল পরিকাঠামোর জন্য এবং ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের কাজে ভারতের উদ্যোগকে সারা পৃথিবী স্বীকৃতি দিয়েছে। আর্থিক ক্ষেত্রে বিপুলভাবে প্রযুক্তির ব্যবহার যে ভাবে ভারতে হয়, পৃথিবীর উন্নত দেশগুলিতেও তা হয় না বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।