অশোকনগর, উত্তর ২৪ পরগনা : গতকাল টাকা ফেরতের দাবিতে পথ অবরোধ করেছিলেন প্রতারিত গ্রাহকেরা। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অশোকনগর থানায় এফআইআর দায়ের করে। এরপরই পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামে। এই থানার অন্তর্গত এলাহাবাদ ব্যাংক বর্তমানে ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের ঈশ্বরীগাছা শাখা থেকে উধাও হয়ে যায় লক্ষ লক্ষ টাকা। তদন্তে নেমেই ব্যাংক জালিয়াতি কাণ্ডে দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করল অশোকনগর থানার পুলিশ।
অভিযুক্তরা হলেন, নাজিমুল ইসলাম (৩৩) বাড়ি অশোকনগর তালসা এলাকায়। অন্যজন পিয়ারুল ইসলাম মন্ডল (৩৫) বাড়ি অশোকনগর মাগুরখালি এলাকায়। ধৃত দুজনই ব্যাংকের লোন রিকভারি ডিপার্টমেন্টে কাজ করতেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। সেখান থেকেই গ্রাহকদের প্যান কার্ড সংগ্রহ করে নাম ও ছবি বদলে বিভিন্নভাবে জালিয়াতি করে এই টাকা হাতিয়ে নেয়। অভিযুক্ত দু’জনের কাছ থেকে নগদ কয়েক লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে অশোকনগর থানার পুলিশ। তবে এর পেছনে আরও কেউ জড়িত আছে বলেই মনে করছে তদন্তকারী অফিসার। বুধবার তাদের সাতদিনের পুলিশ হেফাজত চেয়ে বারাসত আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ যেন এক ভুতুড়ে কান্ড। চেক বই গ্রাহকের কাছে। অথচ গ্রাহকের কাছে থাকা সেই চেক বইয়ের একই নম্বর যুক্ত চেকের মাধ্যমে অর্থ ব্যাংক থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে। উধাও হচ্ছে গ্রাহকের কষ্টের ধন লক্ষ লক্ষ টাকা। কোনও গ্রাহকের ১০ লক্ষ, কারোর বা লক্ষ ৬ বা ৭ লক্ষ টাকা ব্যাংক প্রতারণার শিকার। আনুমানিক ৫০ লক্ষ টাকার মত প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে।
প্রতারিত একজন গ্রাহক বলেন, একসঙ্গে এত বড় পরিমাণ টাকা চেকের মাধ্যমে কেটে যাচ্ছে ব্যাংকের থেকে কোনও ফোন যায়নি গ্রাহকদের কাছে। এক গ্রাহক মারা গেছেন ১০ই মে। তার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে ২৬শে মে। এরকমই ভুতুড়ে ঘটনা প্রকাশ্যে আসে উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অশোকনগর থানার অন্তর্গত বেড়াবেড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ঈশ্বরীগাছা শাখার ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কে।
মঙ্গলবার দুপুরে টাকা ফেরতের দাবিতে হাবরা – নৈহাটি রোড বেশ কিছু সময় অবরোধ করেন প্রতারিত গ্রাহকরা। পরে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাস পেয়ে অবরোধ তুলে নেন।
অন্যদিকে, ইন্ডিয়ান ব্যাংকের জোনাল অফিস থেকে দুই প্রতিনিধি মঙ্গলবার ঈশ্বরীগাছা শাখায় এসে কয়েকজন প্রতারিত গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলেন। ম্যানেজারের সঙ্গেও আলোচনা করেন ওই দুই প্রতিনিধি। টাকা ফেরতের ব্যাপারে অবশ্য এখনো পর্যন্ত তেমন কোনও আশ্বাস না
মেলায় ক্ষুব্ধ গ্রাহকেরা। প্রতারিত হয়েছেন ওই এলাকার দীপঙ্কর অধিকারী, প্রকাশ চন্দ্র মন্ডল সহ পাঁচ থেকে ছয় জন গ্রাহক।
ওই ব্যাংক থেকে থানায় এফআইআর করা হয়েছে বলে জানা গেছে। বেড়াবেড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানা বর্ণালী ঘোষ জানান, পুলিশ ও ব্যাংক তদন্ত করে দেখছে। গ্রাহকেরা যাতে সুবিচার পান তার জন্য সমস্ত ধরনের সহযোগিতা আমরা করব।