নয়াদিল্লি : ১০০ বছরেরও বেশি সময়ের পুরনো ১৯১৭ সালের অভ্যন্তরীণ জাহাজ চলাচল আইন প্রত্যাহার ও বাতিল করে সংসদে আজ ‘অভ্যন্তরীণ জাহাজ চলাচল বিল – ২০২১’ পাশ হয়েছে । এই বিল পাশ হওয়ায় অভ্যন্তরীণ জল পরিবহনের ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূচনা হবে । প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর দৃ্ষ্টিভঙ্গী বাস্তবায়নে আইনী পরিকাঠামোকে সকলের উপযুক্ত তোলা এবং সহজে ব্যবসায় উৎসাহ যোগাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে । রাজ্যসভায় আজ বন্দর, জাহাজ চলাচল এবং জলপথ মন্ত্রকের মন্ত্রী শ্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এই বিলটি পেশ করেন । এখন এই বিলটি রাষ্ট্রপতির সম্মতির জন্য পাঠানো হয়েছে ।
বন্দর, জাহাজ চলাচল এবং জলপথ মন্ত্রী শ্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল জানান যে, ঔপনিবেশিক আইনগুলি বাতিল করে সমুদ্র পথের আধুনিকিকরণ ও সমসাময়িক চাহিদা পূরণ এবং উন্নয়নের লক্ষ্যেই মন্ত্রক এই আইন প্রণয়নে উদ্যোগী হয়েছে । তিনি আরও জানান, অভ্যন্তরীণ জলপথের ক্ষেত্রে এক অভিন্ন বিধি ও নিয়ম নিয়ে আসতে সরকার উদ্যোগী। এতে, অভ্যন্তরীণ জলপথে নির্বিঘ্নে, নিরাপদে জাহাজ চলাচল সুনিশ্চিত হবে এবং বাণিজ্যিক বিকাশ ঘটবে।
অন্যদিকে, ভারতীয় বন্দর বিল ২০২০ খসড়া বিষয়ে রাজ্য সরকার, রাজ্য উপকূল পর্ষদ, প্রধান বন্দর সমূহ, সাধারণ মানুষ ইত্যাদি সংশ্লিষ্ট পক্ষের কাছ থেকে মতামত চাওয়া হয়। এই মতামত ও পরামর্শগুলি বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রক যথাযথ বিবেচনা ও পরীক্ষা করে দেখার পর ভারতীয় বন্দর বিল ২০২১ –এ অন্তর্ভুক্ত করেছে।
এখন ভারতীয় বন্দর বিল ২০২১–এর বিষয়ে সমস্ত পক্ষের মতামত চাওয়া হয়েছে। গত ২৪ জুন রাজ্য উপকূল উন্নয়ন পর্ষদের বৈঠকে এই বিলের বিষয়ে আলোচনা হয়। রাজ্য সরকারগুলির মতামতের জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। এই প্রস্তাবিত আইনটি এখনও আলোচনা পর্যায়ে রয়েছে।
26 জুলাই রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে একথা জানিয়েছেন বন্দর, জাহাজ চলাচল ও জলপথ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর।
জাহাজ চলাচল মন্ত্রক অভ্যন্তরীণ জলপথ পরিবহনকে পরিপূরক, পরিবেশ বান্ধব এবং স্বল্পমূল্যের পরিবহন ব্যবস্থা হিসেবে তুলে ধরার জন্য ভারত সরকারের দৃষ্টিভঙ্গী বিচার করে জলপথ ব্যবহারের ভাড়ায় ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ৩ বছরের জন্য এই ভাড়া ছাড় দেওয়া হবে।
দেশে বর্তমানে মোট পণ্যবাহী যানবাহনের মধ্যে মাত্র ২ শতাংশ জলপথ দিয়ে চলাচল করে। জলপথে এই ভাড়া ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্তে শিল্প সংস্থাগুলি তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী জাতীয় জলপথ ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই জলপথ পরিবহন যথেষ্টই পরিবেশ বান্ধব এবং সস্তা। এতে খরচও কম লাগে। এই ভাড়া ছাড়ের ফলে অন্যান্য পরিবহন ব্যবস্থাগুলির ওপর নির্ভরশীলতা যেমন কমিয়ে আনবে তেমনই সহজে ব্যবসায় উৎসাহ যোগাবে।
জাতীয় জলপথে জাহাজের মাধ্যমে পণ্য পরিবহনের জন্য এই ভাড়া প্রযোজ্য ছিল। বর্তমানে অভ্যন্তরীণ জলপথ পরিবহণ কর্তৃপক্ষ অভ্যন্তরীণ পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ‘গড় নিবন্ধিত টনেজ’ অর্থাৎ টনের হিসাবে জাহাজের উপর ধার্য শুল্ক অনুযায়ী ০.০২ টাকা এবং অভ্যন্তরীণ ক্রুজ ভেসেলের জন্য প্রতি কিলোমিটারে ০.০৫ টাকা জল পথের ভাড়া হিসেবে আদায় করে থাকে।
এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে অভ্যন্তরীণ পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল বৃদ্ধি পাবে। এতে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড এবং সামগ্রিক অঞ্চলের উন্নয়ন সম্ভবপর হবে।